গুণে ভরা তেজপাতার অজানা ১৬ টি গুনাগুণ
তেজপাতা
তেজপাতা এক প্রকারের উদ্ভিদ।সাধারণ অন্যান্য গাছের মতই তেজপাতা গাছ হয়ে থাকে।তেজপাতা অনেক সুগন্ধিযুক্ত ঔষধি একটি পাতা যা আমরা সাধারণত মশলা হিসেবে বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার করে থাকি।বিভিন্ন খাবারে সুগন্ধি আনার জন্য আমরা তেজপাতাকে মশলা হিসেবে ব্যবহার করে থাকি।
তেজপাতা শুধু যে আমাদের রান্নাতেই কাজে আসে তা কিন্তু নয়,তেজপাতার এমন অনেক গুণাগুণ আছে যা আমরা জানি না।তেজপাতা শুধু খাবারেই স্বাদ বাড়ায় তা কিন্তু না স্বাস্থ্য সুরক্ষাতেও এর গুণের জুড়ি মেলা ভার।
১. সকালে তেজপাতা খাওয়ার উপকারিতা
আমাদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে তেজপাতা।সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ২-৩টি তেজপাতা পানিতে দিয়ে ফুটিয়ে কুসুম গরম অবস্থায় খেলে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার।তেজপাতার পানি আমাদের খিদা কমিয়ে দেয় এবং শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সহায়তা করে।
২. ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে তেজপাতা
অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও অনিয়মিত জীবনযাপন এবং অতিরিক্ত মানসিক ও কাজের চাপসহ বিভিন্ন কারণে ডায়াবিটিস হতে পারে।যদিও ডায়াবিটিস ভালো করা যায় না তবে একে নিয়ন্ত্রণে রেখে ভালোথাকা যায়।প্রতিদিন ১-৩ গ্রাম তেজপাতা খাবারের সাথে থাকলে ডায়াবিটিস কমতে সাহায্য করে।তেজপাতা গ্রহণ করলে রক্তে গ্লুকোজ ও কোলেস্টরেলের মাত্রা কমে।
৩. হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখে তেজপাতা
উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।তেজপাতা গ্রহণ করলে রক্তে গ্লুকোজ ও কোলেস্টরেলের মাত্রা কমে।তেজপাতায় রুটিন ও ক্যাফেক নামক অ্যাসিড রয়েছে যা হার্টের দেয়ালকে মজবুত করে।
৪. ক্যানসারের বিরুদ্ধে তেজপাতা
প্রতিদিন ১-৩ গ্রাম তেজপাতা খাবারের সাথে থাকলে তেজপাতা গ্রহণ করলে রক্তে গ্লুকোজ ও কোলেস্টরেলের মাত্রা কমে।তেজপাতা ক্যানসারের কোষ ধ্বংস করে।তেজপাতায় ফাইটোনিউট্রিয়ান্স ও ক্যাটচীন নামক উপাদান থাকায় ক্যানসারের কোষকে রাখতে পারে।
৫. কিডনির পাথরের চিকিৎসায় তেজপাতা
শরীরে উরিয়ার পরিমাণ বেড়ে গেলে এটি কিডনির সমস্যা করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ২-৩টি তেজপাতা পানিতে দিয়ে ফুটিয়ে কুসুম গরম অবস্থায় খেলে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার।তেজপাতা শরীরে উরিয়ার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
৬. ব্যথা উপশমে তেজপাতা
তেজপাতায় রয়েছে ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট উপাদান যা শরীরের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে।এটি শরীরের প্রদাহ দূর করে।মাথা ও গাঁটের ব্যথা সারাতে অব্যর্থ তেজপাতা।
৭. সর্দি কাশিতে তেজপাতা
তেজপাতায় আছে বিভিন্ন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল যা মানুষের শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহ কমিয়ে থাকে।সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পেতে তেজপাতার চা খাওয়া খুব ভালো উপকারে আসে।
৮. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে তেজপাতা
তেজপাতা শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বের করে দেয়।শরীরে হজম রস তৈরিতে তেজপাতা উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে।তেজপাতায় থাকা এনজাইম সহজেয় খুব দ্রুত খাবার ভাঙতে পারে।প্রতিদিন তেজপাতা সেবনে হজম ক্ষমতা বাড়বে এবং গ্যাস-অ্যাসিডিটি থেকেও মুক্তি মিলবে।
৯. ক্ষত সারাতে তেজপাতা
তেজপাতায় আছে বিভিন্ন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল যা মানুষের শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহ কমিয়ে থাকে।এছাড়াও তেজপাতায় থাকা মাইক্রোব্যাকটেরিয়াল উপাদান শরীরে ক্ষত সারাতে দারুণ কাজ করে।
১০. অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করে তেজপাতা
নিয়মিত তেজপাতা চিবিয়ে খেলে অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করে।
১১. দাঁত সাদা করতে তেজপাতা
চা-কফি,তামাক, অ্যালকোহল-এসবের কারণে আমাদের দাঁত হলুদ হয়ে যায়।শুকনো তেজপাতা গুরা পানির সাথে মিশিয়ে পেস্টের মত ব্যবহার করলে দাঁত সাদা ও ঝকঝকে হবে।
১২. চুলের খুশকি দূর করতে তেজপাতা
তেজপাতায় আছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান যা চুলের খুশকি দূর করতে সহায়তা করে।৩-৪ টি তেজপাতা গুঁড়ো করে পরিমাণ মত নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে কুসুম গরম অবস্থায় মাথার তালুতে ব্যবহার করুণ এতে খুশকি দূর হবে।
১৩. চুল পড়া কমাতে তেজপাতা
চুল শ্যাম্পু করার পর তেজপাতা দিয়ে ফোটানো ঠাণ্ডা পানি চুলে মাখিয়ে ৭-১০ মিনিট রেখে চুল মুছে ফেলুন।এভাবে সপ্তায় অন্তত একবার করে ব্যবহার করলে চুল পড়া রোধ হবে।
১৪. মাথার চুলকানি কমাতে তেজপাতা
তেজপাতায় আছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান।নিয়মিত তেজপাতা মিশ্রিত পানি ব্যবহার করলে ফাঙ্গাল ইনফেকশন দূর হয়।তবে মাথার চুলকানি যদি দীর্ঘদিনের হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াটায় বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
১৫. ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে তেজপাতা
তেজপাতা সেদ্ধ পানির ভাপ অ্যান্টি এইজিং সলিউশন হিসেবে কাজ করে,এজন্য তেজপাতা সেদ্ধ করা পানির ভাপ নিতে পারেন।
১৬. শরীরের দুর্গন্ধ দূর করতে
শুকনো তেজপাতা গুঁড়ো করে একটি পরিষ্কার কাপরে বেঁধে সেই পুটলি কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং পানিটি হালকা কুসুম গরম করে গোসল করে নিন এতে আপনার শরীরের দুর্গন্ধ দূর হবে।
সতর্কতা
গর্ভাশয় অবস্থায় তেজপাতা খেতে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।তেজপাতায় অ্যালার্জি জাতীয় কিছু পদার্থ রয়েছে তাই যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাঁরা অবশ্যই তেজপাতা এড়িয়ে চলবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url